তাঁর নাম ডাঃ ইয়ান স্টিভেনসন (অক্টোবর 31, 1918 – ফেব্রুয়ারী 8,
2007); তিনি কানাডিয়ান বংশোদ্ভুত আমেরিকার মানসিক রোগের একজন চিকিৎসক। মহান
এই ব্যক্তি নিজের জীবনের শেষ ৪০ বছর শুধু জন্মান্তরবাদের প্রমাণ এবং
উদাহরণ সংগ্রহ করেই কাটিয়েছেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হল তার
“Children Who Remember Previous Lives” নামক বইটি সহ পূণর্জন্মের উপর লেখা
তার ১৪ টি বই(উইকিপিডিয়া), যেটতে প্রায় তিন হাজারের বেশি মানুষের উদাহরণ
আছে যারা পূর্বজন্মের কথা অবলীলায় বলতে পারে।
বড় বড় সন্দেহবাদী এবং পন্ডিতসহ অনেকেই তার এই সংগ্রহকে পূণর্জন্মের সেরা
প্রমাণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। অনেকেই পূণর্জন্মের ব্যপারটিকে অবহেলা
করে এই বলে যে, যারা স্মরণ করে, তারা সম্মোহিত(hypnosis) অবস্থায় থাকে। এই
ব্যপারটিকে মাথায় রেখেই স্টিভেনসন তার কার্যক্রম চালিয়ে যান এবং কেবলমাত্র
সেইসব শিশুদেরই উদাহরণ সংগ্রহ করেন, যারা অবলীলায় এবং স্বতঃস্ফুর্তভাবে
তাদের আগের জীবনের কথা স্মরণ করতে পারে। নির্ভুলভাবে এগোবার জন্য স্টিভেনসন
শিশুদের পূর্বজন্মের ঘটনার বর্ণনাগুলো শিশুদের মুখে শুনে খুব সাবধানতার
সঙ্গে খসড়া করে রাখতেন। পরে তিনি শিশুটি আগের জন্মে যে ব্যক্তি হিসেবে
নিজেকে পরিচয় দেয়, সেই মৃত ব্যক্তির পরিচয় খুঁজে বের করতেন এবং ঐ মৃত
ব্যক্তি সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করে দেখতেন যে, ঐ শিশুর বর্ণনার সাথে মৃত
ব্যক্তির সম্বন্ধে পাওয়া তথ্যগুলো হুবহু মিলে যায় (এটাই স্বাভাবিক, কারণ ঐ
শিশুই আগের জন্মে ঐ মৃত ব্যক্তিই ছিলেন এবং এই জন্মেও শিশুটি আগের জন্মের
স্মৃতি ভোলেনি)। এমনকি স্টিভেন্সন ঐ শিশুর থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে শুনতেন যে,
আগের জন্মে সে কিভাবে মারা গেছে, শরীরে কোনো ক্ষত চিহ্ন ছিল কিনা, কোনো
জন্মচিহ্ন, জন্মগত কোনো ত্রুটি বা অঙ্গহানি ছিল কি না। পরে তিনি ঐ মৃত
ব্যক্তির মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখে এর সত্যতা যাচাই করেন এবং প্রত্যেকবারই
শিশুর বর্ণনার সাথে তা হুবহু মিলে যায়। স্বাভাবিক প্রকৃয়ায় এগিয়ে যাবার
কারণে তাঁর সংগ্রহ করা তথ্যগুলো ছিল নির্ভুল। তিনি এটাও দেখেন যে, একটি
শিশু ছেলে হলেও আগের জন্মে সে নারী ছিল, কিংবা এই জন্মে নারী হলেও আগের
জন্মে সে পুরুষ ছিল।
উল্লেখ্য, তিনি কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই গবেষনায় নামেননি। তার ব্যক্তিগত কিছু জিজ্ঞাসা, আগ্রহ থেকেই তিনি এই গবেষনা চালিয়ে যান। তাই পূণর্জন্মকে কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস ভেবে যারা ভুল করেন, তারা এই ব্যক্তির বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন।
উল্লেখ্য, তিনি কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই গবেষনায় নামেননি। তার ব্যক্তিগত কিছু জিজ্ঞাসা, আগ্রহ থেকেই তিনি এই গবেষনা চালিয়ে যান। তাই পূণর্জন্মকে কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস ভেবে যারা ভুল করেন, তারা এই ব্যক্তির বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন।
এখন চলুন দেখি পূণর্জন্ম নিয়ে সনাতন ধর্ম কি বলেঃ
“অজ্ঞানের দ্বারা আচ্ছাদিত হইয়া জীব কখনও পুরুষ,কখনও স্ত্রী, কথনও নপুংসক মানুষ ,কখনও দেবতা ,কখনও পশু ,কখনও পক্ষী ইত্যাদি হয় । এইভাবে সে এই জড়জগতে ভ্রমণ করিতে থাকে। প্রকৃতির গুণের দ্বারা প্রভাবিত হইয়া তাহার কর্ম অনুসারে সে বিভিন্ন প্রকার শরীর ধারণ করে ।”
(শ্রীমদভাগবত ৪/২৯/২৯)
“এই জড়জগতে বদ্ধ জীবসমুহ আমার সনাতন বিভিন্নাংশ। জড়া প্রকৃতির বন্ধনে আবদ্ধ হবার ফলে তারা মনসহ ছয়টি ইন্দ্রিয়ের দ্বারা প্রকৃতিরুপ ক্ষেত্রে কঠোর সংগ্রাম করছে। বায়ু যেমন ফুলের গন্ধ নিয়ে অন্যত্র গমন করে, তেমনি এই জড় জগতে দেহের ঈশ্বর জীব এক শরীর থেকে অন্য শরীরে তার জীবনের বিভিন্ন ধারণাগুলি নিয়ে যায়। মূঢ় লোকেরা দেখতে পায় না কিভাবে জীব দেহ ত্যাগ করে অথবা প্রকৃতির গুণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিভাবে তার পরবর্তী শরীর সে ভোগ করে। জ্ঞান-চক্ষুবিশিষ্ট ব্যক্তিগণ সমস্ত বষয় দেখতে পান।” (গীতা ১৫/৭,৮ ও ১০)
এখানে বোঝানো হচ্ছে যে, জীবাত্মা নয় পুরুষ, নয় নারী, নয় বৃহন্নলা। নারী-পুরুষ-বৃহন্নলা, এগুলো হল এই দেহের বৈশিষ্ট।
“অজ্ঞানের দ্বারা আচ্ছাদিত হইয়া জীব কখনও পুরুষ,কখনও স্ত্রী, কথনও নপুংসক মানুষ ,কখনও দেবতা ,কখনও পশু ,কখনও পক্ষী ইত্যাদি হয় । এইভাবে সে এই জড়জগতে ভ্রমণ করিতে থাকে। প্রকৃতির গুণের দ্বারা প্রভাবিত হইয়া তাহার কর্ম অনুসারে সে বিভিন্ন প্রকার শরীর ধারণ করে ।”
(শ্রীমদভাগবত ৪/২৯/২৯)
“এই জড়জগতে বদ্ধ জীবসমুহ আমার সনাতন বিভিন্নাংশ। জড়া প্রকৃতির বন্ধনে আবদ্ধ হবার ফলে তারা মনসহ ছয়টি ইন্দ্রিয়ের দ্বারা প্রকৃতিরুপ ক্ষেত্রে কঠোর সংগ্রাম করছে। বায়ু যেমন ফুলের গন্ধ নিয়ে অন্যত্র গমন করে, তেমনি এই জড় জগতে দেহের ঈশ্বর জীব এক শরীর থেকে অন্য শরীরে তার জীবনের বিভিন্ন ধারণাগুলি নিয়ে যায়। মূঢ় লোকেরা দেখতে পায় না কিভাবে জীব দেহ ত্যাগ করে অথবা প্রকৃতির গুণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিভাবে তার পরবর্তী শরীর সে ভোগ করে। জ্ঞান-চক্ষুবিশিষ্ট ব্যক্তিগণ সমস্ত বষয় দেখতে পান।” (গীতা ১৫/৭,৮ ও ১০)
এখানে বোঝানো হচ্ছে যে, জীবাত্মা নয় পুরুষ, নয় নারী, নয় বৃহন্নলা। নারী-পুরুষ-বৃহন্নলা, এগুলো হল এই দেহের বৈশিষ্ট।
ইতিকথাঃ সনাতনধর্ম কোনো কিছুকে “নেই” বলে প্রমাণ করার চেষ্টা কোনোদিন
করে নি, বরং অনেক হিন্দু বিদ্বাষী সনাতন ধর্মের অনেক কিছুকেই “নেই” প্রমাণ
করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। কথিত আছে এ, এই
মহাবিশ্বে কোনোকিছুকে আছে প্রমাণ করা যত সহজ, কোনোকিছুকে নেই প্রমাণ করা
তার চেয়ে বেশি কঠিন, কারণ মানুষ এখনও মহাবিশ্বের সামান্যই অংশই আবিষ্কার
করেছে।
নিজে জানুন অন্যকে জানাতে চেষ্টা করুন। ভাল লাগলে আমাদের উৎসাহিত করুন।