স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন , '' ধর্ম হল সেটাই , যা পশুকে মানুষে
এবং মানুষকে দেবতায় পরিণত করে। '' এর অর্থ হল , - ধর্ম ' হল একটি বিকাশের প্রক্রিয়া । পাশবিক মানুষের আনন্দ
শুধু শরীরগত । শরীরের সুখ বা ইন্দ্রিয়চরিতার্থতা ছাড়া সে আর কিছুই বোঝেনা । আর একটু উন্নত হলে মানুষ মানসিক আনন্দলাভের
অধিকারী হয় , তখন সে সাহিত্য রস , শিল্পের রস অনুভব করতে পারে । এটাকে মানবীয় স্তর বলা যায় ।
আরও উন্নত অবস্থায় মানুষ ঈশ্বরীয় আনন্দে
বিভোর হয় , ধ্যানাবস্থায় শান্তির অপূর্ব পরিবেশ অনুভব
করতে পারে ; যাকে বলা যায় দৈবী স্তর । এভাবে উন্নত হতে হতে মানুষ যখন দেহ ,
মন ইন্দ্রিয়ের গণ্ডি অতিক্রম করে তখনই সে লাভ করে শাশ্বত জ্ঞান
বা সনাতন সত্য । সে অনুভব করে সে ক্ষুদ্র নয় সে দেহ নয় ,
মন নয় এমনকি চিন্তা চেতনাও নয় , সে আত্মা । সে এক অনন্ত , অখণ্ড অস্তিত্ব । মানুষ তখন তার ক্ষুদ্রতার খোলস পরিত্যাগ করে
অনন্ত ' আমিত্বে ' লীন হয়ে যায় । ' নির্গচ্ছতি জগজ্জালাৎ পিঞ্জরাদিব কেশরী '
-- সিংহ যেমন পিঞ্জর ভেঙ্গে ফেলে বেরিয়ে যায় ঠিক তেমনি সে এই
জগৎ-জাল ভেদ করে মুক্ত হয়ে যায় । ধর্মের চরম লক্ষ্য হল মুক্তি । ধর্ম হল এই রূপান্তরের প্রক্রিয়া ,
যা পশুকে মানুষে , মানুষকে দেবতায়
এবং দেবতাকে ঈশ্বরে বিকশিত করে ।
ঋষিদের আবিষ্কৃত এই সত্যলাভের পথই সনাতন ধর্ম
।