* হিন্দুরা নারকেলের শুকনো খোসা দিয়ে ধূপ দেয় কেন ?
উঃ- নারকেলের শুকনো খোসার ধোয়াতে মশা মাছি চলে যায় । এছাড়া এতে গুড়ো ধূপ
যোগ করলে সুগন্ধ উৎপন্ন হয়। এই ধূম রোগ জীবানু নষ্ট করে। মশক ও মাছি বাহিত
রোগের আশাঙ্কা কমে যায়। তাই হিন্দুরা নারকেলের শুকনো খোসা দিয়ে ধূপ দেয় ।
ঠিক এই কারনে বসন্ত রোগের সময় হিন্দুরা শুকনো নিমপাতার ধোয়া দেয়। নিম পাতা
চর্ম রোগের প্রতিষেধক । একই কারনে হিন্দুরা বসন্ত রোগের সময় রোগীকে
নিমপাতার বাতাস দেন ।
* হিন্দুরা ভূমিকম্পের সময় উলু ধ্বনি, শঙ্খ নাদ ও কাঁসর বাজায় কেন ?
উঃ- হিন্দুরা ভূমিকম্পের সময় উলু ধ্বনি, শঙ্খ নাদ ও কাঁসর বাজায় । এর
উদ্দেশ্য হোলো ভূমিকম্পের সময় সকলকে সতর্ক করে দেওয়া। যারা বহুতলে থাকেন
তারা শুনতে পেয়ে যেনো খোলা মাঠে তারাতারি চলে আসতে পারেন । তাই ভূমিকম্পের
সময় উলু ধ্বনি ও শঙ্খ নাদ ও কাঁসর বাজানো হয় ।
* হিন্দুরা বইতে পূজার বেলপাতা রেখে দেয় কেন ?
উঃ- হিন্দুরা বইতে পূজার বেলপাতা রেখে দেয়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ছাত্র
ছাত্রীরা সরস্বতী পূজার প্রসাদী বেলপাতা বইতে রেখে দেয়। বেলপাতা আয়ুর্বেদিক
ঔষধ। এর গন্ধে বই কাটার পোকা বইতে আক্রমণ করে বই নষ্ট করতে পারে না ।
* হিন্দুরা ঈশ্বরের নৈবদ্যে তুলসী পাতা ও বেলপাতা দেয় কেন ?
উঃ- বেলপাতা ও তুলসী পাতা আয়ুর্বেদিক ঔষধ। প্রসাদে দেওয়া হয় তার কারন যাতে
কোনো প্রকার জীবানু প্রসাদে না আসতে পারে । অথবা প্রসাদ গ্রহণে যেনো শরীর
নিরোগ হয়। এই কারনে হিন্দুরা চরণামৃতে তুলসী ও বেলপাতা ও কর্পূর মেশান । আর
তাম্র পাত্রে চরণামৃত বানান। তাম্র পাত্রের জল পান করলে পেটের অসুখ নিরাময়
হয় ।
* হিন্দুরা মৃতদেহ দাহ করে কেন ?
উঃ- হিন্দুরা শব দেহ কেন দাহ করে তার প্রচুর আধ্যাত্মিক ও তত্ত্ব কথা আছে।
একটি হোলো মানুষ মারা যায় নানা কারনে , কিছু রোগে। শব দাহর সাথে সাথে
ক্ষতিকারক জীবানু অগ্নিতে ভস্ম হয় । ঠিক এই কারনে হিন্দুরা শবের চোখে তুলসী
পত্র ও নাকে তুলো গুজে দেন। যাতে জীবানু ছড়িয়ে না যায়। তুলসী পত্র অনেক
প্রকার রোগ আটকায়, তুলোর দ্বারা নাক দিয়ে জীবানু আসা বন্ধ হয় । ঠিক এই
কারনে শব দাহ করে ফেরার পর আগুনের তাপ ও নিমপাতা খাওয়ার, স্নান করার বিধান
আছে। আগুন জীবানু ভস্ম করে, নিমপাতা শরীরের ভেতরে জীবানুকে নাশ করে, স্নান
করলে শরীর শুদ্ধ হয় ।
* হিন্দুরা উপবাস, একাদশী, বার ব্রত করে কেন ?
ঊঃ- আমরা রোজ ভাত খাই। পেটে পরিপাক হয়। কিন্তু পেটের বিশ্রাম দরকার । তাই
বার ব্রত উপবাস একাদশী করা হয়। এর ফলে পরিপাক যন্ত্র ঠিক থাকে। একদিন
অন্নের বদলে ফলমূল সেবনে শরীর ভালো থাকে। বিজ্ঞানীরাও উপবাসের প্রয়োজনীয়তা
স্বীকার করেন । উপবাসের সময় জল, কাঁচা দুগ্ধ পানে শরীরের বর্জ্য পদার্থ
ঘাম, মল, মূত্র রূপে শরীর থেকে নিস্কাশিত হয়। তবে ঘন ঘন উপবাস ভালো না। তাই
হিন্দু ধর্মে ঘন ঘন উপবাস নিষেধ করা আছে । বাতের রোগী অমাবস্যা, পূর্ণিমা
তে নিশি পালন করলে লাভ হয় ।