অনেকেই পেজে প্রশ্ন করে শিব লিঙ্গের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন।অনেকে আমাদের কে লিখেছেন যে, তাদের লজ্জা লাগে শিব লিঙ্গ দেখে কারন তাদের অহিন্দু বন্ধুরা এটা নিয়ে উপহাস করে এবং শিব লিঙ্গকে পুরুষাঙ্গের অনুকল্প বলে মনে করে, জাগতিক ভোগ ও বাসনার সাথে মিশিয়ে ফেলে।আবার অনেকে শিব লিঙ্গকে বলতে চান, লিঙ্গ ও যোনির সম্মিলিত রূপটি "নারী ও পুরুষের অবিভাজ্য ও অদ্বৈত সত্ত্বা, পরোক্ষ স্থান ও প্রত্যক্ষ সময়, যা থেকে সকল জীবনের উৎপত্তি", তার প্রতীক।
আসলে হাজার বছরের বিদেশি শাসনে পরাধীন থাকায় বিদেশী শাসকগন সনাতন ধর্মকে নিয়ে যা ইচ্ছে তাই করেছে। শুধু উপাসনালয় ভেঙ্গেই ক্ষান্ত থাকেনি, নানা কুৎসা রটাতেও পিছপা হয়নি। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় মুসলিম শাসকরা মন্দির ধ্বংসে মনযোগী ছিল আর ইংরেজরা মন্দির ভাঙ্গেনি ঠিক তবে বুদ্ধিমান পাদ্রীরা আমাদের ধর্মকে আঘাত করেছে অন্যভাবে। ১৮১৫ সালে আ ভিউ অফ দ্য হিস্ট্রি, লিটারেচার, অ্যান্ড মিথোলজি অফ দ্য হিন্দুজ গ্রন্থে লেখক ব্রিটিশ মিশনারি উইলিয়াম ওয়ার্ড হিন্দুদের অন্যান্য ধর্মীয় প্রথার সঙ্গে লিঙ্গপূজারও নিন্দা করেছিলেন। তাঁর মতে লিঙ্গপূজা ছিল, "মানুষের চারিত্রিক অবনতির সর্বনিম্ন পর্যায়"। শিবলিঙ্গের প্রতীকবাদটি তাঁর কাছে ছিল "অত্যন্ত অশালীন; সে সাধারণের রুচির সঙ্গে মেলানোর জন্য এর যতই পরিমার্জনা করা হোক না কেন"। ব্রায়ান পেনিংটনের মতে, ওয়ার্ডের বইখানা "ব্রিটিশদের হিন্দুধর্ম সম্পর্কে ধারণা ও উপমহাদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্তৃত্বের মূল ভিত্তিতে পরিণত হয়েছিল।" ব্রিটিশরা মনে করত, শিবলিঙ্গ পুরুষ যৌনাঙ্গে আদলে নির্মিত এবং শিবলিঙ্গের পূজা ভক্তদের মধ্যে কামুকতা বৃদ্ধি করে।প্রতীক।"ডেভিড জেমস স্মিথ প্রমুখ গবেষকেরা মনে করেন, শিবলিঙ্গ চিরকালই পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গটি বহন করছে।জেনেন ফলারের মতে, লিঙ্গ "পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গেনির্মিত এবং এটি মহাবিশ্ব-রূপী এক প্রবল শক্তির।
আবার ইউরোপের সব বুদ্ধিজীবী হিন্দু বিদ্বেষী ছিল এটা বলা অন্যায় হবে।কারন অনেকেই শিব লিঙ্গ সম্পর্কে উপরোক্ত মতবাদকে গ্রহণ না করে সত্য অনুসন্ধান করেছেন। যেমন ১৮২৫ সালে হোরাস হেম্যান উইলসন দক্ষিণ ভারতের লিঙ্গায়েত সম্প্রদায় সম্পর্কে একটি বই লিখে এই ধারণা খণ্ডানোর চেষ্টা করেছিলেন।
নৃতাত্ত্বিক ক্রিস্টোফার জন ফুলারের মতে, হিন্দু দেবতাদের মূর্তি সাধারণত মানুষ বা পশুর অনুষঙ্গে নির্মিত হয়। সেক্ষেত্রে প্রতীকরূপী শিবলিঙ্গ একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম।কেউ কেউ মনে করেন, লিঙ্গপূজা ভারতীয় আদিবাসী ধর্মগুলি থেকে হিন্দুধর্মে গৃহীত হয়েছে।
এবার আমরা জানব শিবলিঙ্গ আসলে কিঃ
_______________________________________________
শিবলিঙ্গ বা লিঙ্গম্ দেবতা শিবের একটি প্রতীক। হিন্দু মন্দিরগুলিতে সাধারণত শিবলিঙ্গে শিবপূজা করা হয়ে থাকে।একটি সাধারণ তত্ত্ব অনুযায়ী, শিবলিঙ্গ শিবের আদি-অন্তহীন সত্ত্বার প্রতীক এক আদি ও অন্তহীন স্তম্ভের রূপবিশেষ।
শিব এক অনাদি অনন্ত লিঙ্গস্তম্ভের রূপে আবির্ভূত, বিষ্ণু বরাহ বেশে স্তম্ভের নিম্নতল ও ব্রহ্মা ঊর্ধ্বতল সন্ধানে রত। এই অনাদি অনন্ত স্তম্ভটি শিবের অনাদি অনন্ত সত্ত্বার প্রতীক মনে করা হয়।
আবার কেউ কেউ শিব লিঙ্গের ব্যাখ্যা দেন এভাবে, ইহা গোল কিম্বা উপবৃত্তাকার যা কোন বৃত্তাকার ভূমি (base ) কে কেন্দ্র করে স্থাপিত । এই গোল ভূমি কে আদি পরশক্তি বা চূড়ান্ত শক্তি ।আর সেই গোল কিম্বা বৃত্তাকার অংশ দ্বারা অসীম কে বোঝান হয় যার কোন আদি অন্ত নেই অর্থাৎ যা সর্ববিরাজমান । সর্ববিরাজমান অর্থ হল যা সব জায়গায় অবস্থিত ।
ইহা দ্বারা বোঝান হয় ঈশ্বর নির্দিষ্ট আকার নাও থাকতে পারে। ঈশ্বর আদি অন্ত জুড়ে সর্বত্র বিরাজমান ।
সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা ইহার ডান দিকে অবস্থান করছেন । রক্ষাকর্তা বিষ্ণু বাম দিকে অবস্থান করছেন ।
এছাড়াও এই শিবলিঙ্গের কিছু ব্যখ্যা রয়েছে যার সব গুলোতেই বুঝানো হয়েছে - infinity বোঝাতে কিম্বা জীবনের continuation বোঝাতে এই শিব লিঙ্গের অবতারণা ।
এককথায় বোঝান হয়েছেঃ ঈশ্বর শুধু মাত্র স্বর্গে বা মন্দিরে অবস্থিত না , ভক্ত যেখানে তার জন্য প্রার্থনা করে । সেখানেই তিনি অবস্থিত
অথর্ববেদে একটি স্তম্ভের স্তব করা হয়েছে। এটিই সম্ভবত লিঙ্গপূজার উৎস। কারোর কারোর মতে যূপস্তম্ভ বা হাঁড়িকাঠের সঙ্গে শিবলিঙ্গের যোগ রয়েছে। উক্ত স্তবটিকে আদি-অন্তহীন এক স্তম্ভ বা স্কম্ভ-এর কথা বলা হয়েছে; এই স্কম্ভ চিরন্তন ব্রহ্মের স্থলে স্থাপিত। যজ্ঞের আগুন, ধোঁয়া, ছাই, সোমরস ও যজ্ঞের কাঠ বহন করার ষাঁড় ইত্যাদির সঙ্গে শিবের শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলির যোগ লক্ষিত হয়। মনে করা হয়, কালক্রমে যূপস্তম্ভ শিবলিঙ্গের রূপ নিয়েছিল। লিঙ্গপুরাণে এই স্তোত্রটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একটি কাহিনির অবতারণা করা হয়। এই কাহিনিতে উক্ত স্তম্ভটিকে শুধু মহানই বলা হয়নি বরং মহাদেব শিবের সর্বোচ্চ সত্ত্বা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারত ও কম্বোডিয়ায় প্রচলিত প্রধান শৈব সম্প্রদায় ও অনুশাসন গ্রন্থ শৈবসিদ্ধান্ত মতে, উক্ত শৈব সম্প্রদায়ের প্রধান উপাস্য দেবতা পঞ্চানন (পাঁচ মাথা-বিশিষ্ট) ও দশভূজ (দশ হাত-বিশিষ্ট) সদাশিব প্রতিষ্ঠা ও পূজার আদর্শ উপাদান হল শিবলিঙ্গ।
মনিয়ার উইলিয়ামস তাঁর ব্রাহ্মণইজম্ অ্যান্ড হিন্দুইজম্ বইয়ে লিখেছেন, "লিঙ্গ" প্রতীকটি "শৈবদের মনে কোনো অশালীন ধারণা বা যৌনপ্রণয়াকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয় না। অন্যদিকে এন. রামচন্দ্র ভট্ট প্রমুখ গবেষকেরা মনে করেন, পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গটি অপেক্ষাকৃত পরবর্তীকালের রচনা।এম. কে. ভি. নারায়ণ শিবলিঙ্গকে শিবের মানবসদৃশ মূর্তিগুলি থেকে পৃথক করেছেন। তিনি বৈদিক সাহিত্যে লিঙ্গপূজার অনুপস্থিতির কথা বলেছেন এবং এর যৌনাঙ্গের অনুষঙ্গটিকে তান্ত্রিকসূত্র থেকে আগত বলে মত প্রকাশ করেছেন।
১৯০০ সালে প্যারিস ধর্মীয় ইতিহাস কংগ্রেসে রামকৃষ্ণ পরমহংসের শিষ্য ভারত সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ বলেন, শিবলিঙ্গ ধারণাটি এসেছে বৈদিক যূপস্তম্ভ বা স্কম্ভ ধারণা থেকে। ১৯০০ সালে প্যরিসে হয়ে যাওয়া ধর্মসমূহের ঐতিহাসিক মূল শীর্ষক সম্মেলনে বিশ্ববাসীর সামনে অথর্ববেদের স্কম্ভসুক্তের সাহায্যে তুলে ধরেন যে শিবলিঙ্গ মূলত বিশ্বব্রহ্মান্ডের ই প্রতীক।যূপস্তম্ভ বা স্কম্ভ হল বলিদানের হাঁড়িকাঠ। এটিকে অনন্ত ব্রহ্মের একটি প্রতীক মনে করা হত।জার্মান প্রাচ্যতত্ত্ববিদ গুস্তাভ ওপার্ট শালগ্রাম শিলা ও শিবলিঙ্গের উৎস সন্ধান করতে গিয়ে তাঁর গবেষণাপত্রে এগুলিকে পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গে সৃষ্ট প্রতীক বলে উল্লেখ করে তা পাঠ করলে, তারই প্রতিক্রিয়ায় বিবেকানন্দ এই কথা বলেছিলেন।বিবেকানন্দ বলেছিলেন, শালগ্রাম শিলাকে পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গ বলাটা এক কাল্পনিক আবিষ্কার মাত্র। তিনি আরও বলেছিলেন, শিবলিঙ্গর সঙ্গে পুরুষাঙ্গের যোগ বৌদ্ধধর্মের পতনের পর আগত ভারতের অন্ধকার যুগে কিছু অশাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির মস্তিস্কপ্রসূত গল্প।
স্বামী শিবানন্দও শিবলিঙ্গকে যৌনাঙ্গের প্রতীক বলে স্বীকার করেননি।স্বামী শিবানন্দ বলেন,"এটি শুধু ভূল ই নয় বরং অন্ধ অভিযোগ ও বটে যে শিবলিঙ্গ পুরুষলিঙ্গের প্রতিনিধিত্বকারী।"তিনি লিঙ্গপুরানের নিম্নলিখিত শ্লোকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন-
"প্রধানাম প্রকৃতির যদাধুর লিঙ্গমুত্তমম গান্ধবর্নরসাহৃনম শব্দ স্পর্শাদি বর্জিতম"
অর্থাত্ লিঙ্গ হল প্রকৃতির সর্বোচ্চ প্রকাশক যা স্পর্শ, বর্ন,গন্ধহীন।
আসলে হাজার বছরের বিদেশি শাসনে পরাধীন থাকায় বিদেশী শাসকগন সনাতন ধর্মকে নিয়ে যা ইচ্ছে তাই করেছে। শুধু উপাসনালয় ভেঙ্গেই ক্ষান্ত থাকেনি, নানা কুৎসা রটাতেও পিছপা হয়নি। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় মুসলিম শাসকরা মন্দির ধ্বংসে মনযোগী ছিল আর ইংরেজরা মন্দির ভাঙ্গেনি ঠিক তবে বুদ্ধিমান পাদ্রীরা আমাদের ধর্মকে আঘাত করেছে অন্যভাবে। ১৮১৫ সালে আ ভিউ অফ দ্য হিস্ট্রি, লিটারেচার, অ্যান্ড মিথোলজি অফ দ্য হিন্দুজ গ্রন্থে লেখক ব্রিটিশ মিশনারি উইলিয়াম ওয়ার্ড হিন্দুদের অন্যান্য ধর্মীয় প্রথার সঙ্গে লিঙ্গপূজারও নিন্দা করেছিলেন। তাঁর মতে লিঙ্গপূজা ছিল, "মানুষের চারিত্রিক অবনতির সর্বনিম্ন পর্যায়"। শিবলিঙ্গের প্রতীকবাদটি তাঁর কাছে ছিল "অত্যন্ত অশালীন; সে সাধারণের রুচির সঙ্গে মেলানোর জন্য এর যতই পরিমার্জনা করা হোক না কেন"। ব্রায়ান পেনিংটনের মতে, ওয়ার্ডের বইখানা "ব্রিটিশদের হিন্দুধর্ম সম্পর্কে ধারণা ও উপমহাদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্তৃত্বের মূল ভিত্তিতে পরিণত হয়েছিল।" ব্রিটিশরা মনে করত, শিবলিঙ্গ পুরুষ যৌনাঙ্গে আদলে নির্মিত এবং শিবলিঙ্গের পূজা ভক্তদের মধ্যে কামুকতা বৃদ্ধি করে।প্রতীক।"ডেভিড জেমস স্মিথ প্রমুখ গবেষকেরা মনে করেন, শিবলিঙ্গ চিরকালই পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গটি বহন করছে।জেনেন ফলারের মতে, লিঙ্গ "পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গেনির্মিত এবং এটি মহাবিশ্ব-রূপী এক প্রবল শক্তির।
আবার ইউরোপের সব বুদ্ধিজীবী হিন্দু বিদ্বেষী ছিল এটা বলা অন্যায় হবে।কারন অনেকেই শিব লিঙ্গ সম্পর্কে উপরোক্ত মতবাদকে গ্রহণ না করে সত্য অনুসন্ধান করেছেন। যেমন ১৮২৫ সালে হোরাস হেম্যান উইলসন দক্ষিণ ভারতের লিঙ্গায়েত সম্প্রদায় সম্পর্কে একটি বই লিখে এই ধারণা খণ্ডানোর চেষ্টা করেছিলেন।
নৃতাত্ত্বিক ক্রিস্টোফার জন ফুলারের মতে, হিন্দু দেবতাদের মূর্তি সাধারণত মানুষ বা পশুর অনুষঙ্গে নির্মিত হয়। সেক্ষেত্রে প্রতীকরূপী শিবলিঙ্গ একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম।কেউ কেউ মনে করেন, লিঙ্গপূজা ভারতীয় আদিবাসী ধর্মগুলি থেকে হিন্দুধর্মে গৃহীত হয়েছে।
এবার আমরা জানব শিবলিঙ্গ আসলে কিঃ
_______________________________________________
শিবলিঙ্গ বা লিঙ্গম্ দেবতা শিবের একটি প্রতীক। হিন্দু মন্দিরগুলিতে সাধারণত শিবলিঙ্গে শিবপূজা করা হয়ে থাকে।একটি সাধারণ তত্ত্ব অনুযায়ী, শিবলিঙ্গ শিবের আদি-অন্তহীন সত্ত্বার প্রতীক এক আদি ও অন্তহীন স্তম্ভের রূপবিশেষ।
শিব এক অনাদি অনন্ত লিঙ্গস্তম্ভের রূপে আবির্ভূত, বিষ্ণু বরাহ বেশে স্তম্ভের নিম্নতল ও ব্রহ্মা ঊর্ধ্বতল সন্ধানে রত। এই অনাদি অনন্ত স্তম্ভটি শিবের অনাদি অনন্ত সত্ত্বার প্রতীক মনে করা হয়।
আবার কেউ কেউ শিব লিঙ্গের ব্যাখ্যা দেন এভাবে, ইহা গোল কিম্বা উপবৃত্তাকার যা কোন বৃত্তাকার ভূমি (base ) কে কেন্দ্র করে স্থাপিত । এই গোল ভূমি কে আদি পরশক্তি বা চূড়ান্ত শক্তি ।আর সেই গোল কিম্বা বৃত্তাকার অংশ দ্বারা অসীম কে বোঝান হয় যার কোন আদি অন্ত নেই অর্থাৎ যা সর্ববিরাজমান । সর্ববিরাজমান অর্থ হল যা সব জায়গায় অবস্থিত ।
ইহা দ্বারা বোঝান হয় ঈশ্বর নির্দিষ্ট আকার নাও থাকতে পারে। ঈশ্বর আদি অন্ত জুড়ে সর্বত্র বিরাজমান ।
সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা ইহার ডান দিকে অবস্থান করছেন । রক্ষাকর্তা বিষ্ণু বাম দিকে অবস্থান করছেন ।
এছাড়াও এই শিবলিঙ্গের কিছু ব্যখ্যা রয়েছে যার সব গুলোতেই বুঝানো হয়েছে - infinity বোঝাতে কিম্বা জীবনের continuation বোঝাতে এই শিব লিঙ্গের অবতারণা ।
এককথায় বোঝান হয়েছেঃ ঈশ্বর শুধু মাত্র স্বর্গে বা মন্দিরে অবস্থিত না , ভক্ত যেখানে তার জন্য প্রার্থনা করে । সেখানেই তিনি অবস্থিত
অথর্ববেদে একটি স্তম্ভের স্তব করা হয়েছে। এটিই সম্ভবত লিঙ্গপূজার উৎস। কারোর কারোর মতে যূপস্তম্ভ বা হাঁড়িকাঠের সঙ্গে শিবলিঙ্গের যোগ রয়েছে। উক্ত স্তবটিকে আদি-অন্তহীন এক স্তম্ভ বা স্কম্ভ-এর কথা বলা হয়েছে; এই স্কম্ভ চিরন্তন ব্রহ্মের স্থলে স্থাপিত। যজ্ঞের আগুন, ধোঁয়া, ছাই, সোমরস ও যজ্ঞের কাঠ বহন করার ষাঁড় ইত্যাদির সঙ্গে শিবের শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলির যোগ লক্ষিত হয়। মনে করা হয়, কালক্রমে যূপস্তম্ভ শিবলিঙ্গের রূপ নিয়েছিল। লিঙ্গপুরাণে এই স্তোত্রটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একটি কাহিনির অবতারণা করা হয়। এই কাহিনিতে উক্ত স্তম্ভটিকে শুধু মহানই বলা হয়নি বরং মহাদেব শিবের সর্বোচ্চ সত্ত্বা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারত ও কম্বোডিয়ায় প্রচলিত প্রধান শৈব সম্প্রদায় ও অনুশাসন গ্রন্থ শৈবসিদ্ধান্ত মতে, উক্ত শৈব সম্প্রদায়ের প্রধান উপাস্য দেবতা পঞ্চানন (পাঁচ মাথা-বিশিষ্ট) ও দশভূজ (দশ হাত-বিশিষ্ট) সদাশিব প্রতিষ্ঠা ও পূজার আদর্শ উপাদান হল শিবলিঙ্গ।
মনিয়ার উইলিয়ামস তাঁর ব্রাহ্মণইজম্ অ্যান্ড হিন্দুইজম্ বইয়ে লিখেছেন, "লিঙ্গ" প্রতীকটি "শৈবদের মনে কোনো অশালীন ধারণা বা যৌনপ্রণয়াকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয় না। অন্যদিকে এন. রামচন্দ্র ভট্ট প্রমুখ গবেষকেরা মনে করেন, পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গটি অপেক্ষাকৃত পরবর্তীকালের রচনা।এম. কে. ভি. নারায়ণ শিবলিঙ্গকে শিবের মানবসদৃশ মূর্তিগুলি থেকে পৃথক করেছেন। তিনি বৈদিক সাহিত্যে লিঙ্গপূজার অনুপস্থিতির কথা বলেছেন এবং এর যৌনাঙ্গের অনুষঙ্গটিকে তান্ত্রিকসূত্র থেকে আগত বলে মত প্রকাশ করেছেন।
১৯০০ সালে প্যারিস ধর্মীয় ইতিহাস কংগ্রেসে রামকৃষ্ণ পরমহংসের শিষ্য ভারত সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ বলেন, শিবলিঙ্গ ধারণাটি এসেছে বৈদিক যূপস্তম্ভ বা স্কম্ভ ধারণা থেকে। ১৯০০ সালে প্যরিসে হয়ে যাওয়া ধর্মসমূহের ঐতিহাসিক মূল শীর্ষক সম্মেলনে বিশ্ববাসীর সামনে অথর্ববেদের স্কম্ভসুক্তের সাহায্যে তুলে ধরেন যে শিবলিঙ্গ মূলত বিশ্বব্রহ্মান্ডের ই প্রতীক।যূপস্তম্ভ বা স্কম্ভ হল বলিদানের হাঁড়িকাঠ। এটিকে অনন্ত ব্রহ্মের একটি প্রতীক মনে করা হত।জার্মান প্রাচ্যতত্ত্ববিদ গুস্তাভ ওপার্ট শালগ্রাম শিলা ও শিবলিঙ্গের উৎস সন্ধান করতে গিয়ে তাঁর গবেষণাপত্রে এগুলিকে পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গে সৃষ্ট প্রতীক বলে উল্লেখ করে তা পাঠ করলে, তারই প্রতিক্রিয়ায় বিবেকানন্দ এই কথা বলেছিলেন।বিবেকানন্দ বলেছিলেন, শালগ্রাম শিলাকে পুরুষাঙ্গের অনুষঙ্গ বলাটা এক কাল্পনিক আবিষ্কার মাত্র। তিনি আরও বলেছিলেন, শিবলিঙ্গর সঙ্গে পুরুষাঙ্গের যোগ বৌদ্ধধর্মের পতনের পর আগত ভারতের অন্ধকার যুগে কিছু অশাস্ত্রজ্ঞ ব্যক্তির মস্তিস্কপ্রসূত গল্প।
স্বামী শিবানন্দও শিবলিঙ্গকে যৌনাঙ্গের প্রতীক বলে স্বীকার করেননি।স্বামী শিবানন্দ বলেন,"এটি শুধু ভূল ই নয় বরং অন্ধ অভিযোগ ও বটে যে শিবলিঙ্গ পুরুষলিঙ্গের প্রতিনিধিত্বকারী।"তিনি লিঙ্গপুরানের নিম্নলিখিত শ্লোকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন-
"প্রধানাম প্রকৃতির যদাধুর লিঙ্গমুত্তমম গান্ধবর্নরসাহৃনম শব্দ স্পর্শাদি বর্জিতম"
অর্থাত্ লিঙ্গ হল প্রকৃতির সর্বোচ্চ প্রকাশক যা স্পর্শ, বর্ন,গন্ধহীন।
১৮৪০ সালে এইচ. এইচ. উইলসন একই কথা বলেছিলেন।ঔপন্যাসিক ক্রিস্টোফার ইসারউড লিঙ্গকে যৌন প্রতীক মানতে চাননি।ব্রিটানিকা এনসাইক্লোপিডিয়ায় "Lingam" ভুক্তিতেও শিবলিঙ্গকে যৌন প্রতীক বলা হয়নি।
মার্কিন ধর্মীয় ইতিহাস বিশেষজ্ঞ ওয়েনডি ডনিগারের মতে,
For Hindus, the phallus in the background, the archetype (if I may use the word in its Eliadean, indeed Bastianian, and non-Jungian sense) of which their own penises are manifestations, is the phallus (called the lingam) of the god Siva, who inherits much of the mythology of Indra (O'Flaherty, 1973). The lingam appeared, separate from the body of Siva, on several occasions... On each of these occasions, Sivas wrath was appeased when gods and humans promised to worship his lingam forever after, which, in India they still do. Hindus, for instance, will argue that the lingam has nothing whatsoever to do with the male sexual organ, an assertion blatantly contradicted by the material. যদিও অধ্যাপক ডনিগার পরবর্তীকালে তাঁর দ্য হিন্দুজ: অ্যান অল্টারনেটিভ হিস্ট্রি বইতে তাঁর বক্তব্য পরিষ্কার করে লিখেছেন। তিনি বলেছেন, কোনো কোনো ধর্মশাস্ত্রে শিবলিঙ্গকে ঈশ্বরের বিমূর্ত প্রতীক বা দিব্য আলোকস্তম্ভ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই সব বইতে লিঙ্গের কোনো যৌন অনুষঙ্গ নেই।
হেলেন ব্রুনারের মতে, লিঙ্গের সামনে যে রেখাটি আঁকা হয়, তা পুরুষাঙ্গের গ্ল্যান্স অংশের একটি শৈল্পিক অনুকল্প। এই রেখাটি আঁকার পদ্ধতি মধ্যযুগে লেখা মন্দির প্রতিষ্ঠা-সংক্রান্ত অনুশাসন এবং আধুনিক ধর্মগ্রন্থেও পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠাপদ্ধতির কিছু কিছু প্রথার সঙ্গে যৌন মিলনের অনুষঙ্গ লক্ষ্য করা যায়। যদিও গবেষক এস. এন. বালগঙ্গাধর লিঙ্গের যৌন অর্থটি সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
মার্কিন ধর্মীয় ইতিহাস বিশেষজ্ঞ ওয়েনডি ডনিগারের মতে,
For Hindus, the phallus in the background, the archetype (if I may use the word in its Eliadean, indeed Bastianian, and non-Jungian sense) of which their own penises are manifestations, is the phallus (called the lingam) of the god Siva, who inherits much of the mythology of Indra (O'Flaherty, 1973). The lingam appeared, separate from the body of Siva, on several occasions... On each of these occasions, Sivas wrath was appeased when gods and humans promised to worship his lingam forever after, which, in India they still do. Hindus, for instance, will argue that the lingam has nothing whatsoever to do with the male sexual organ, an assertion blatantly contradicted by the material. যদিও অধ্যাপক ডনিগার পরবর্তীকালে তাঁর দ্য হিন্দুজ: অ্যান অল্টারনেটিভ হিস্ট্রি বইতে তাঁর বক্তব্য পরিষ্কার করে লিখেছেন। তিনি বলেছেন, কোনো কোনো ধর্মশাস্ত্রে শিবলিঙ্গকে ঈশ্বরের বিমূর্ত প্রতীক বা দিব্য আলোকস্তম্ভ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই সব বইতে লিঙ্গের কোনো যৌন অনুষঙ্গ নেই।
হেলেন ব্রুনারের মতে, লিঙ্গের সামনে যে রেখাটি আঁকা হয়, তা পুরুষাঙ্গের গ্ল্যান্স অংশের একটি শৈল্পিক অনুকল্প। এই রেখাটি আঁকার পদ্ধতি মধ্যযুগে লেখা মন্দির প্রতিষ্ঠা-সংক্রান্ত অনুশাসন এবং আধুনিক ধর্মগ্রন্থেও পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠাপদ্ধতির কিছু কিছু প্রথার সঙ্গে যৌন মিলনের অনুষঙ্গ লক্ষ্য করা যায়। যদিও গবেষক এস. এন. বালগঙ্গাধর লিঙ্গের যৌন অর্থটি সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
এ লেখাটা লিখেছি সনাতনীদের জন্য। যারা শিব লিঙ্গ কি তা জানেন না অথবা ভুল জেনে লজ্জিত হন।যারা সর্বদা হিন্দু ধর্মের ছিদ্রান্বেষী তাদের জন্য না কারন ওরা জেগে জেগে ঘুমাতে পছন্দ করে। তবে যারা উদ্দেশ্য মুলক ভাবে শিব লিঙ্গকে অশালীন বলতে চায় তাদের জন্য বলতে চাই দিবা নিশি যে যা ভাবে সব কিছুর ভিতরে তারই প্রতিরূপ খুজে পাবে; এটাই স্বাভাবিক।