যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীর একমাত্র খাবার কি ? যা কিনা বছরের পর বছর গেলেও নষ্ট হয় না বা পঁচে যায় না । উত্তরটি ভাবতেই ঘন্টার পর ঘন্টা মাথা চুলকানো ছাড়া বোধহয় আর কোন কিছু করার থাকবে না । কেননা ভগবানের সৃষ্টির মধ্যে এমনও কি খাবার রয়েছে যা কিনা কোনদিন নষ্ট হয় না । তাহলে উত্তরটাও শুনে নিন, মধুই হল পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র খাবার যা কিনা কখনো নষ্ট হয় না । মধু সম্পর্কে এরকম অবিশ্বাস্য তথ্যই এর শেষ নয় । এর রয়েছে অজস্র গুণাবলী যা বর্তমান যুগের বিজ্ঞানীদের গবেষনা থেকে বেরিয়ে এসেছে । সবচেয়ে অবাকের বিষয় এই যে, সব ধরনের রোগের ঔষধ হিসেবেও মধু নাকি উপযুক্ত । নিম্নে মধুর এইসব নানারকম অজানা
গুণাবলী তুলে ধরা হল ।
গুণাবলী তুলে ধরা হল ।
আশা করি মধুর এসব গুণাবলী জেনে সবাই উপকৃত হবেন ।
মধু এবং দারুচিনিঃ –
এ গবেষনায় দেখা গেছে, মধুর সঙ্গে দারুচিনি মিশ্রন গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের অধিকাংশ রোগের উপশম হবে । আধুনিক বিজ্ঞানীরা তাই মধুকে সব ধরনের রোগের এক মহৌষধ হিসেবে এক বাক্যে স্বীকার করেছে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন – যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের জন্য মিষ্টি জাতীয় কিছু গ্রহণ মানে ভয়ংকার বিপদের কারণ । তাই দুর্ভাগ্যক্রমে অনেক ডায়বেটিস রোগী কোন মিষ্টান্ন গ্রহণ করতে পারে না । তাদের জন্য সুখবর হল মধু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও গ্রহণযোগ্য । বর্তমান কালের বিজ্ঞানীদের গবেষনায় উঠে এসেছে যে, যদি কোন ডায়াবেটিস রোগী এটি রোগের উপশম বা ঔষধ হিসেবে গ্রহণ করে তবে তার কোন ক্ষতি হয় না ।
১৭ জানুয়ারি ১৯৯৫ সালে কানাডায় Weekly world news নামক একটি ম্যাগাজিনে সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীদের গবেষণালব্দ ফলাফলসম্বলিত এটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় যেখানে দারুচিনি ও মধুর মিশ্রন বিশেষত কোন কোন রোগের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত তার একটি তালিকা তুলে ধরা হয়।
হৃদরোগ – প্রতিদিন নাস্তার সময় জেলি এবং জ্যামের পরিবর্তে রুটির সঙ্গে যদি মধু মিশিয়ে খাওয়া হয় তবে বিজ্ঞানীদের মতে তা যে কাউকে হার্ট অ্যাটাক থেকে রক্ষা করে । কেননা এটি শরীরে কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় । শুধু তাই নয় যাদের ইতোমধ্যে হার্টঅ্যাটাক হয়েছে তারা যদি দৈনন্দিনভাবে এই প্রক্রিয়ায় খাদ্যাভাস গড়ে তোলেন তবে পরবর্তী হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে অনেক দূরে থাকবে । এই প্রক্রিয়া আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্টও রোধ করে । আমেরিকা এবং কানাডার বিভিন্ন নামিদামী নার্সিং হোমে রোগীদেরকে এ প্রকার খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত করা হয় । যেসব রোগীদের ধমনী এবং শিরার নমনীয়তা হারিয়ে যায় তারা এ প্রক্রিয়ায় তা আবার পুনরুদ্ধার করতে পারবেন ।
গেঁটে বাত (Arthritis) - গেঁটে বাত রোগীর সকালে এবং রাতে এক কাপ গরম জলের সঙ্গে দুই চা চামচ মধু এবং এক ছোট চা-চামচ দারুচিনির গুঁড়ে মিশিয়ে নৈমিত্তিক খেলে বলা হয় যে এমনকি এ রোগও সেরে যায় ।
মূত্রথলির ইনফিকশন – দু’টেবিল চামচে দারুচিনির গুঁড়ো এবং এক চা চামচ মধু এক গ্লাসে নিয়ে পানি মিশিয়ে পান করুন । এটি তখন আপনার মূত্রথলির সমস্ত জীবাণু ধ্বংস করবে ।
সর্দি – যাদের সাধারন কিংবা মারাত্মক সর্দি কাশি লেগেই আছে তারা এক চতুর্থাংশ দারুচিনির গুড়োর সঙ্গে এক টেবিলচামচ মধু মিশিয়ে তিন দিন খান । বলা হয় যে, এ প্রক্রিয়া আপনার ক্রনিক কাশি, সর্দি এবং সাইনাসেস পরিষ্কার করে ।
পাকস্থলী সমস্যা – দারুচিনির গুঁড়োর সঙ্গে মধু আপনার পাকস্থলীর ব্যাথা দূর করবে এবং মূল থেকে পাকস্থলীর আলসার পরিষ্কার করে ।
গ্যাস – ভারত এবং জাপানে এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বের করেছেন যে যদি মধু ও দারুচিনির গুঁড়ো একসাথে খাওয়া হয় তবে পাকস্থলীর গ্যাস মুক্ত হয় ।
ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের আক্রমণ – দৈনন্দিনভাবে মধু এবং দারুচিনির গুড়ো একসাথে খেলে মানব শরীর বিভিন্ন ধরণের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের আক্রমন হতে রক্ষা পায় । বিজ্ঞানীর গবেষণায় দেখেছে যে, মধুর রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং বিশাল পরিমানের আইরণ । ফলে মধু এসব ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সহায়তা করে ।
বদহজম – যদি কেউ খাবার গ্রহনের পূর্বে দু’টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে অল্প দারুচিনি মিশিয়ে খায় তবে তার এসিডিটি বা অম্লতা দূর হয় এবং খাবার হজম করে ।
সৌন্দর্য বৃদ্ধি - চার চামচ মধু, এক চামচ দারুচিনি এবং তিন কাপ জল নিয়ে সিদ্ধ করে এটি চা এর মত করে গ্রহণ করলে আপনার চামড়া ফ্রেস দেখাবে এবং অকাল বার্ধক্য লোপ পাবে ।
চামড়ার ইনফেকশন – একইভাবে মধু ও দারুচিনির মিশ্রন গ্রহণ করলে এজমাসহ সমস্ত ধরনের চামড়ার ইনফেকসন থেকে মুক্ত হতে পারেন ।
ওজন কমাতে – প্রতিদিন সকালে নাস্তার আধ-এক ঘন্টা পূর্বে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মধু এবং দারুচিনির গুঁড়োর মিশ্রণ পানি সহ সিদ্ধ করে খেলে মোটাব্যক্তির ওজন কমাতে সক্ষম । এমনকি এই অবস্থায় তিনি উচ্চ ক্যালরিক সুষম খাবারও গ্রহণ করতে পারেন তাতে কোন অসুবিধাই হবে না ।
ক্যান্সার – জাপান এবং অষ্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় ধরা পড়েছে যে, পেটের এবং হাড়ের ক্যান্সার খুব তাড়াতাড়ি এবং সফলভাবেই ভালো করতে সক্ষম । তবে সেক্ষেত্রে এসব রোগীদের দৈনন্দিন এক টেবিলচামচ মধুর সাথে এক টেবিলচামচ দারুচিনির গুড়ো একমাস দিনে তিনবার করে গ্রহণ করতে হবে ।
শ্রবণ শক্তি – যাদের শ্রবণ শক্তি একটু কম তার সম পরিমাণের মধু এবং দারুচিনির গুঁড়ো প্রতিদিন সকালে এবং রাতে খেলে দারুন উপকার পেতে পারেন শ্রবণ শক্তি বৃদ্ধিতে ।এভাবে প্রাকৃতিক খাদ্য মধু প্রকৃতই জরুরী আমাদের স্বাস্থ্য টিকে রাখতে ।
ভালো লাগলে শেয়ার/ লাইক দিতে ভুলবেন না